হেপাটাইটিস বি-ভাইরাস (HBV/HBsAg)
হেপাটাইটিস বি-ভাইরাস (HBV/HBsAg)
হেপাটাইটিস বি-ভাইরাস (HBV/HBsAg) একটি
ডিএনএ(DNA) ভাইরাস যা মানুষের লিভারে সংক্রমণ ঘটায়। এটি হেপাটাইটিস বি রোগের কারণ হয়, যা লিভার প্রদাহ এবং ক্ষতির সৃষ্টি করতে পারে। এই ভাইরাসটি রক্ত, শুক্রাণু, বা অন্যান্য শরীরের তরলের মাধ্যমে ছড়ায় এবং প্রধানত দুইভাবে সংক্রমিত হয়: জন্মের সময় মায়ের থেকে শিশুর মধ্যে এবং অপরিষ্কার সূঁচ বা রক্তের সংস্পর্শের মাধ্যমে।
হেপাটাইটিস বি-ভাইরাস (HBV/HBsAg) সংক্রমণের ফলস্বরূপ তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী (ক্রনিক) সংক্রমণ হতে পারে। তীব্র সংক্রমণ সাধারণত শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিরাময় হয়, কিন্তু ক্রনিক সংক্রমণ লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সার এবং লিভারের কার্যক্ষমতার হ্রাসের দিকে নিয়ে যেতে পারে।হেপাটাইটিস বি এর বিরুদ্ধে একটি কার্যকর টিকা রয়েছে, যা এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর।
হেপাটাইটিস
বি-ভাইরাস
(HBV/HBsAg) পজিটিভ
হলে করনীয়:
১. ডাক্তারের পরামর্শ নিন-
বিশেষজ্ঞ
ডাক্তারের পরামর্শ:
গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট বা
হেপাটোলজিস্টের পরামর্শ
নিন। তারা
আপনাকে সংক্রমণের
ধরণ, অবস্থা
এবং চিকিৎসার
প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে
বিস্তারিত জানাবেন।
২. পরীক্ষা এবং মূল্যায়ন-
ভাইরাসের
পরিমাণ নির্ণয়:
HBV ডিএনএ পরীক্ষা
করে ভাইরাসের
পরিমাণ নির্ধারণ
করতে হবে।
লিভারের
অবস্থা মূল্যায়ন:
লিভারের কার্যক্ষমতা
নির্ধারণের জন্য
রক্ত পরীক্ষা
এবং আল্ট্রাসনোগ্রাম
বা ফাইব্রোস্ক্যান
করতে হতে
পারে।
জটিলতা
নির্ধারণ: লিভার
সিরোসিস বা
লিভার ক্যান্সারের
ঝুঁকি আছে
কিনা তা
পরীক্ষা করা
দরকার।
৩. চিকিৎসা-
প্রয়োজনীয়
ঔষধ: দীর্ঘস্থায়ী
সংক্রমণের ক্ষেত্রে
ডাক্তার অ্যান্টিভাইরাল
ঔষধ বা
ইমিউন মডুলেটরি
থেরাপি নির্ধারণ
করতে পারেন।
এই ঔষধগুলি
ভাইরাসের বৃদ্ধি
কমিয়ে দিতে
এবং লিভারের
ক্ষতি প্রতিরোধ
করতে সহায়ক।
টিকাদান:
যদি সংক্রমণটি
সদ্য ধরা
পড়ে, তখন
টিকা নেয়া
হতে পারে।
৪. জীবনধারা পরিবর্তন-
স্বাস্থ্যকর
খাদ্যাভ্যাস: লিভারের
স্বাস্থ্য রক্ষার
জন্য স্বাস্থ্যকর
খাবার খাওয়া
এবং মদ্যপান
পরিহার করা
জরুরি।
চিকিৎসকের
নির্দেশনা মেনে
চলা: নিজে
থেকে কোনো
ঔষধ বা
ওষুধ গ্রহণ
না করে
সবসময় চিকিৎসকের
পরামর্শ মেনে
চলুন।
শারীরিক
পরিশ্রম: নিয়মিত
ব্যায়াম এবং
সুস্থ জীবনযাপনের
চেষ্টা করুন।
৫. পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা-
পরীক্ষা
এবং টিকাদান:
আপনার পরিবারের
সদস্যদের হেপাটাইটিস
বি পরীক্ষার
এবং টিকা
দেওয়ার প্রয়োজন
হতে পারে।
ভাইরাসটি রক্তের
মাধ্যমে ছড়াতে
পারে, তাই
সাবধান থাকা
জরুরি।
৬. নিয়মিত ফলোআপ-
নিয়মিত
পরীক্ষা: সংক্রমণের
অবস্থা পর্যবেক্ষণ
করতে এবং
চিকিৎসার অগ্রগতি
নিরীক্ষণ করতে
ডাক্তার নির্দেশিত
নিয়মিত পরীক্ষা
করুন।
হেপাটাইটিস
বি-ভাইরাস
(HBV/HBsAg) এর
চিকিৎসা খরচ
বাংলাদেশেঃ
বাংলাদেশে হেপাটাইটিস
বি-ভাইরাস
(HBV/HBsAg) এর চিকিৎসার
খরচ বিভিন্নভাবে
নির্ভর করে।
সাধারণত প্রতি
মাসে এন্টিভাইরাল
ওষুধের জন্য
১,৫০০
থেকে ৩,০০০ টাকা খরচ
হয়। এছাড়া
নিয়মিত লিভার
ফাংশন টেস্ট
এবং অন্যান্য
পরীক্ষার জন্য
অতিরিক্ত খরচ
হতে পারে।
যদি রোগীর
অবস্থা গুরুতর
হয়, তবে
চিকিৎসার খরচ
অনেক বেশি
হতে পারে।
চিকিৎসার মোট
খরচ নির্ভর
করে রোগীর
অবস্থা, চিকিৎসার
ধরন, এবং
ব্যবহৃত ওষুধের
উপর।
হেপাটাইটিস
বি-ভাইরাস
নেগেটিভ করার
উপায়ঃ
হেপাটাইটিস বি
(Hepatitis B) একটি ভাইরাসজনিত
রোগ যা
লিভারের প্রদাহ
ঘটায়। এই
রোগের নেগেটিভ
হওয়ার বা
পুরোপুরি মুক্ত
হওয়ার প্রক্রিয়া
কিছুটা জটিল
হতে পারে,
এবং এটি
ব্যক্তির অবস্থা
অনুযায়ী পরিবর্তিত
হয়।
চিকিৎসা: হেপাটাইটিস
বি-এর
জন্য অ্যান্টিভাইরাল
ওষুধের ব্যবহার
কার্যকর হতে
পারে। লিভার
স্পেশালিস্ট আপনার
জন্য সঠিক
চিকিৎসা নির্ধারণ
করতে পারবেন।
টিকা: হেপাটাইটিস
বি-এর
বিরুদ্ধে টিকা
দেওয়া হয়
যা ভাইরাসের
সংক্রমণ প্রতিরোধে
সহায়ক।
লাইফস্টাইল
পরিবর্তন: স্বাস্থ্যকর
জীবনযাপন, সঠিক
ডায়েট, এবং
নিয়মিত এক্সারসাইজ
করে লিভারকে
সাহায্য করা
যায়।
পুনঃ
পরীক্ষণ: নিয়মিত
মেডিক্যাল চেক-আপ এবং লিভার
ফাংশন টেস্টের
মাধ্যমে আপনার
অবস্থার ওপর
নজর রাখা
জরুরি।
স্বাস্থ্যকর
অভ্যাস: অ্যালকোহল
এবং মাদকদ্রব্যের
ব্যবহার কমিয়ে
আনুন এবং
সুরক্ষিত যৌন
অভ্যাস অনুসরণ
করুন।
হেপাটাইটিস
বি-ভাইরাস
কি ভাল
হয়ঃ
হেপাটাইটিস বি
ভাইরাস (HBV) একটি ভাইরাস
যা লিভারে
সংক্রমণ ঘটায়।
এটি একটি
মারাত্মক রোগ
হতে পারে
যদি তা
সঠিকভাবে চিকিৎসা
না করা
হয়। এই
ভাইরাসের কারণে
লিভারের প্রদাহ,
লিভার সিরোসিস,
এবং লিভার
ক্যান্সারের ঝুঁকি
বেড়ে যায়।
হেপাটাইটিস বি
সাধারণত রক্ত
বা শরীরের
অন্যান্য শরীরের
তরল মাধ্যমে
ছড়ায়।
ভাইরাসটি
সাধারণত দুটি
ধাপে সনাক্ত
করা হয়:
1. আকস্মিক
(Acute) হেপাটাইটিস
বি: এটি
কয়েক মাসের
মধ্যে স্বাভাবিকভাবে
সেরে যায়।
2. ক্রনিক
(Chronic) হেপাটাইটিস
বি: এটি
দীর্ঘমেয়াদী এবং
রোগীর লিভার
ক্ষতির কারণ
হতে পারে।
ভ্যাকসিন দ্বারা
হেপাটাইটিস বি-ভাইরাস থেকে
রক্ষা পাওয়া
সম্ভব। চিকিৎসা
এবং নিয়মিত
পরামর্শে অনেক
মানুষ হেপাটাইটিস
বি নিয়ন্ত্রণ
করতে সক্ষম
হয়।
হেপাটাইটিস
বি হলে
কি বিয়ে
করা যায়ঃ
হেপাটাইটিস বি
হলে বিয়ে
করা সম্ভব,
তবে কিছু
সতর্কতা নেওয়া
উচিত। এই
ভাইরাস সাধারণত
রক্ত বা
শরীরের অন্যান্য
তরল দ্বারা
ছড়ায়, তাই
বিয়ের সময়
নিরাপদ প্র্যাকটিস
যেমন কনডম
ব্যবহার করা
উচিত। হেপাটাইটিস
বি সংক্রমণ
সম্পর্কে স্বামীর
বা স্ত্রীর
জানানো এবং
চিকিৎসকের পরামর্শ
নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে,
সচেতনতা ও
সতর্কতা বজায়
রেখে বিয়ে
করা নিরাপদ।
হেপাটাইটিস
বি কি
ছোঁয়াচে রোগঃ
হ্যাঁ, হেপাটাইটিস
বি একটি
ছোঁয়াচে রোগ।
এটি প্রধানত
রক্ত, শরীরের
অন্যান্য তরল
(যেমন, স্যালিভা),
অথবা ভাইরাস
সংক্রমিত সূঁচ
বা যন্ত্রের
মাধ্যমে ছড়ায়।
সাধারণ দৈনন্দিন
জীবনের মাধ্যমে
(যেমন, হাত
মেলানো বা
সাধারণ খাবার
ভাগাভাগি) এটি
ছড়ায় না।
হেপাটাইটিস
বি কি
জন্ডিসঃ
হেপাটাইটিস বি
নিজে একটি
রোগ, কিন্তু
এটি জন্ডিস
সৃষ্টি করতে
পারে। জন্ডিস
হল একটি
অবস্থা যেখানে
ত্বক ও
চোখের সাদা
অংশ হলুদ
হয়ে যায়,
যা লিভারের
সমস্যা বা
ক্ষতির কারণে
ঘটে। হেপাটাইটিস
বি লিভারের
প্রদাহ সৃষ্টি
করে, যা
জন্ডিসের কারণ
হতে পারে।
সার
কথাঃ
হেপাটাইটিস বি
ভাইরাস
(HBV) একটি
ভাইরাস
যা
লিভারে
প্রদাহ
সৃষ্টি
করে।
এটি
প্রধানত রক্ত,
শরীরের
অন্যান্য তরল,
অথবা
ভাইরাস
সংক্রামিত সূঁচ
বা
যন্ত্রের মাধ্যমে ছড়ায়। হেপাটাইটিস বি
সাধারণত দুই
ধাপে
সনাক্ত
করা
হয়:
আকস্মিক (Acute) এবং ক্রনিক
(Chronic)।
আকস্মিক হেপাটাইটিস বি
সাধারণত কয়েক
মাসে
সেরে
যায়,
কিন্তু
ক্রনিক
হেপাটাইটিস বি
দীর্ঘমেয়াদী হতে
পারে
এবং
লিভারের গুরুতর
সমস্যা
যেমন
লিভার
সিরোসিস ও
ক্যান্সার সৃষ্টি
করতে
পারে।
হেপাটাইটিস বি
থেকে
রক্ষা
পাওয়ার জন্য
ভ্যাকসিন উপলব্ধ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url