OrdinaryITPostAd

শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

শসা (Cucumber) জনপ্রিয় সবজি, যা প্রায় সবখানেই সহজলভ্য। শসা দেখতে সবুজ, লম্বাটে এবং ভেতরে হালকা সাদা রঙের। এটি মূলত গ্রীষ্মকালীন সবজি হলেও, এখন সারা বছরই পাওয়া যায়। শসার একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকেপ্রায় ৯৫%! তাই গরমের সময় শসা খেলে শরীর ঠাণ্ডা থাকে এবং হাইড্রেটেড থাকে।



শসা শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়, এটি শরীরের জন্যও খুব উপকারী। শসা সালাদ, রায়তা, স্মুদি, এমনকি সরাসরি কাঁচা খাওয়া যায়। ত্বকের যত্ন, হজমের সমস্যা সমাধান, ওজন কমানোসহ বিভিন্ন উপকারিতার জন্য শসা অনেকের ডায়েটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

 শসা খাওয়ার উপকারিতা ১০টি উপকারিতা:

1. জলীয় উপাদান : শসার ৯৫% পানি, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।

2.ওজন কমাতে সাহায্য : কম ক্যালরি যুক্ত এবং উচ্চ ফাইবার থাকার কারণে শসা ওজন কমাতে সহায়ক।

3. হজমের কাজ : শসা একটি ফাইবার যুক্ত ফল যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

4. স্কিনের যত্ন : শসার ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্কিনের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের জ্বালা কমায়।

5. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ : শসার পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

6. ডিটক্সিফাইং প্রভাব : শসা শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।

7. বাতের উপশম : শসার অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান শরীরে বেদনা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

8. চোখের ক্লান্তি দূর : শসার কোল্ড কম্প্রেস চোখের ফোলাভাব এবং ক্লান্তি দূর করতে কার্যকর।

9. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি : শসার ভিটামিন সি শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।

10. মুখের দুর্গন্ধ কমাতে : শসা চিবানো মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং মুখের দুর্গন্ধ কমায়।

 শসা খাওয়ার ১০টি অপকারিতা :

1. বেশি খেলে ডায়রিয়া হতে পারে : শসায় প্রচুর পানি থাকে, তাই বেশি খেলে পেট নরম হয়ে ডায়রিয়ার সম্ভাবনা থাকে।

2. বাতের সমস্যা বাড়াতে পারে : শসার উচ্চ পটাসিয়াম মাত্রা কিছু মানুষের ক্ষেত্রে বাতের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।

3. বেলচিং গ্যাস হতে পারে : শসা খাওয়ার পর কিছু মানুষের ক্ষেত্রে পেটে গ্যাস বা বেলচিং হতে পারে।

4. এলার্জির সমস্যা : কিছু মানুষের শসায় থাকা প্রোটিনের কারণে এলার্জি হতে পারে, যেমন ত্বকে চুলকানি বা ফুসকুড়ি।

5. বেশি খেলে পেটে ব্যথা হতে পারে : শসায় ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় অতিরিক্ত খেলে পেটে ব্যথা হতে পারে।

6. রক্তচাপ কমে যেতে পারে : যারা ইতিমধ্যে নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন, তাদের জন্য বেশি শসা খাওয়া রক্তচাপ আরও কমিয়ে দিতে পারে।

7. তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে : শসা শরীরের তাপমাত্রা কমায়, তাই বেশি খেলে শীতে শরীর অতিরিক্ত ঠাণ্ডা হয়ে যেতে পারে।

8. ঘুমের সমস্যা : শসায় থাকা কুকুরবিটাসিন নামক উপাদান ঘুমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।

9. দাঁতের ক্ষয় হতে পারে : শসার অ্যাসিডিক প্রভাব দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে পারে, যদিও এই সমস্যা বিরল।

10. ব্লাড সুগার কমতে পারে : যারা ডায়াবেটিসের জন্য ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে শসা ব্লাড সুগার অতিরিক্ত কমিয়ে দিতে পারে।

শসা খাওয়ার নিয়মঃ

শসা খাওয়ার সঠিক নিয়ম হলো, তাজা ভালোভাবে ধুয়ে কাটা শসা খাওয়া। শসা সাধারণত কাঁচা খাওয়াই ভালো, সালাদ বা স্ন্যাকস হিসেবে। তবে খালি পেটে বেশি শসা না খাওয়াই ভালো, এতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। রাতে বা দুপুরে খাবারের সঙ্গে খেলে হজমের জন্য উপকারী।

রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতাঃ

রাতে শসা খেলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, যা ভালো ঘুম এবং পেটের আরাম নিশ্চিত করে। এছাড়া, শসার অল্প ক্যালরি ফাইবার ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতাঃ

খালি পেটে শসা খেলে শরীর দ্রুত হাইড্রেটেড হয় এবং মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়, যা দিন শুরু করার জন্য উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।

ত্বকে শসার উপকারিতাঃ

শসা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে, উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং শীতল প্রভাব ফেলে, যা ত্বকের জ্বালা ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে তরুণ সুস্থ রাখতে সহায়ক।

ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়মঃ

ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম সহজ কিন্তু কার্যকর। প্রতিদিনের ডায়েটে শসা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, বিশেষ করে সকালে ও দুপুরে খাবারের আগে। সকালে খালি পেটে শসা খেলে পেট ভরা থাকে, যা পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমিয়ে দেয়। দুপুরের খাবারে শসা সালাদ হিসেবে রাখতে পারেন, যা কম ক্যালোরিযুক্ত এবং ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় হজমে সহায়ক। এছাড়া, বিকেলের স্ন্যাকস হিসেবে শসা খাওয়া ভালো, কারণ এটি কম ক্যালোরিযুক্ত হলেও পুষ্টিকর, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

শসার মধ্যে প্রচুর পানি থাকে, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং অতিরিক্ত ক্ষুধার অনুভূতি কমায়। রাতে হালকা খাবারের সঙ্গে শসা খেলে পেট ভরা থাকে, ফলে রাতের খাওয়াও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে, অতিরিক্ত শসা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, কারণ এতে পেটে অস্বস্তি হতে পারে। নিয়মিত শসা খাওয়ার পাশাপাশি পরিমিত ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা উচিত।

শসা খেলে কি গ্যাস হয়ঃ

হ্যাঁ, শসা খেলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে গ্যাস হতে পারে, বিশেষ করে যদি তা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয়। শসার কিছু উপাদান পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে, যা হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে।

সারকথাঃ  শসা খাওয়ার উপকারিতা অনেক, যেমন শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা, হজমে সাহায্য করা, এবং ত্বক উজ্জ্বল করা। তবে, অতিরিক্ত শসা খেলে গ্যাস ও পেটের সমস্যা হতে পারে। শসা খেলে কিছু মানুষের এলার্জিও হতে পারে। এই কারণে, শসা খাওয়ার সময় পরিমাণ বজায় রাখা উচিত এবং শরীরের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা দরকার।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩