পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি
আজকে পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি এই সম্পর্কে আলোচনা করব। পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি জানতে হলে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন। পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি জানা থাকলে আপনি এই রোগটি থেকে দ্রুত মুক্তি লাভ করতে পারবেন।
পাইলস রোগ হলে এই রোগ থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যায় পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি।
পোস্ট সূচিপত্র: পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি
ভূমিকা
পাইলস রোগ হলে তা থেকে বাঁচার উপায় অনেকেই জানে না। তাই আজকের এই পোস্টে আমরা পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। পাইলস থেকে বাঁচার উপায় জেনে খুব সহজেই পাইলস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। বর্তমানে ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সের মানুষদের মধ্যে এই রোগটি বেশি দেখা যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ হলো মানুষের খাদ্যাভ্যাস এবং মানুষের জীবন যাপনের পরিবর্তন। অনেকে মলত্যাগে সমস্যা হলেই মনে করেন পাইলস হয়েছে।
পাইলসের কারণ এবং লক্ষণগুলো দেখে পাইলস হয়েছে কিনা বোঝা যাবে। যদি মলাশয় এর নিচের অংশ এবং মলাশয়ের শিরা গুলো ফুলে যায় তাহলে ধরে নিতে হবে পাইলস হয়েছে। পাইলস দেখা দিলেই পাইলস থেকে বাঁচার উপায় গুলো জেনে নিয়ে চিকিৎসা করতে হবে।
পাইলস কি
পাইলস হল সভ্যতার একটি জটিল রোগ যা মানুষের খাদ্যাভাস এবং জীবন যাপনের অবহেলার কারণে হয়ে থাকে। একজন মানুষ পাইলস আক্রান্ত হলে অনেক অস্বস্তিকর অবস্থায় থাকে। অনেক সময় পাইলসের কারণে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। মলদ্বারের আশেপাশে ফুলে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। এটাই মূলত পাইলস বা অর্শ রোগ। পাইলস হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই নিয়মিত পায় সে চিকিৎসা করলে ভালো হয়ে যায়।
পাইলস থেকে বাঁচার উপায় হল বাড়িতে নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ। আপনি যদি পাইলস রোগ থেকে মুক্তি লাভ করতে চান তাহলে অবশ্যই কিছু উপায় মেনে চলতে হবে। পাইলস থেকে বাঁচার উপায় হলো ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা গ্রহণ। পাইলস কি এ বিষয়ে এখন আমরা জানলাম। নিচে পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয়
পাইলস হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিচে পাইলস হলে কি কি সমস্যা দেখা দিতে পারে সে সম্পর্কে আলোচনা কর হল।
- পাইলস হলে মলদ্বারের আশেপাশে ফুলে যায়।
- পাইলস হলে মলত্যাগের সময় রক্তপাত হতে পারে।
- পাইলস হলে মলদ্বারের আশেপাশে ব্যথা করতে পারে।
- পাইলসের কারণে মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
- পাইলস হলে মলদ্বারের আশেপাশে ফুলে শক্ত হয়ে যায়।
- পাইলসের কারণে পায়ুদ্বারে চুলকানির সৃষ্টি হয়।
- পাইলসের কারণে পায়ুদ্বার নিচের দিকে নেমে আসে।
- পাইলস হলে মলত্যাগের পরেও অস্বস্তি বোধ হয়।
- পাইলসের কারণে অনেক সময় মলদ্বার দিয়ে পিচ্ছিল পদার্থ বের হতে থাকে।
পাইলস হলে উপরোক্ত সমস্যাগুলো দেখা যায়। এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি
যদি আপনাদের প্রশ্ন থাকে পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি। তাহলে এই পোস্টটি পড়লে আপনারা পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি তা জানতে পারবেন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি। পাইলসের সমস্যা দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। প্রাথমিক অবস্থায় পাইলসের সমস্যা দেখা দিলে আমরা অনেকেই গুরুত্ব দেই না। যার কারণে পরবর্তীতে আমাদের পাইলস অপারেশন করতে হয়। তাই পাইলস জটিল আঁকার ধারণ করার আগেই বাড়িতে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। নিচে পাইলস থেকে বাঁচার ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো আলোচনা করা হলো।
- পর্যাপ্ত পানি পান: পাইলস থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। পর্যাপ্ত পানি পান করলে আপনি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন। আর কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো হলেই আপনি পাইলস থেকে মুক্তি পাবেন।
- বরফ: পাইলসের চিকিৎসায় ব্যবহার করতে পারেন বরফ। একটি ব্যাগে বরফ নিয়ে পাইলস আক্রান্ত স্থানে লাগালে পাইপের ব্যথা খুব দ্রুত সেরে যাবে।
- অ্যালোভেরা জেল: পাইলস থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করতে পারেন অ্যালোভেরা জেল। এই জেল সরাসরি পাইলস আক্রান্ত স্থানে লাগালে দ্রুত ব্যথার উপশম হয়।
- অ্যালমন্ড অয়েল: আপনি যদি জানতে চান পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি। তাহলে বলব পাইলস থেকে বাঁচতে হলে ব্যবহার করুন অ্যালমন্ড ওয়েল। কারণ অ্যালমন্ড অয়েল ব্যবহার করলে পাইলস থেকে আপনি দ্রুত মুক্তি লাভ করতে পারবেন।
- অলিভ অয়েল: পাইলসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় অলিভ অয়েল। আক্রান্ত স্থানে নিয়মিত অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে পাইলসের ব্যথা সেরে যায় এবং পাইলস দ্রুত নিরাময় হয়।
- আপেল সিডার ভিনেগার: পাইলসের চিকিৎসায় ব্যবহার করুন আপেল সিডার ভিনেগার। আপেল সিডার ভিনেগার আক্রান্ত স্থানে লাগালে দ্রুত উপশম হয়।
- জাম: পাইলসের চিকিৎসায় ব্যবহার করতে পারেন জাম। তাই পাইলসের চিকিৎসায় নিয়মিত জাম খেতে পারেন।
- নিম: নিম অনেক রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়। পাইলস থেকে মুক্তি পেতে নিমপাতা রস পাইলস আক্রান্ত স্থানে নিয়মিত ব্যবহার করুন।
- লেবুর রস: লেবুর রস পাইলসের জন্য অনেক কার্যকরী। পাইলস থেকে মুক্তি পেতে আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন লেবুর রস।
- উইচ হ্যাজেল: পাইলসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করেন উইচ হ্যাজেল। পাইলস এর চিকিৎসায় উইচ হ্যাজেল অনেক উপকারী।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা: পাইলসের সমস্যা থেকে স্বস্তি পেতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর ভালো থাকে।
- অতিরিক্ত শরীরের ওজন কমানো: শরীরের ওজন অতিরিক্ত হলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত শরীর চর্চা করার মাধ্যমে শরীরে ওজন কম করুন। এতে পাইলস থেকে দ্রুত মুক্তি পাবেন।
- গরম পানির ভাপ নেওয়া: পাইলসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গরম পানির ভাপ নিন। গরম পানিতে কিছুক্ষণ বসে থাকুন তাহলে পাইলসের ব্যথা অনেকটা কমে যাবে।
- প্রয়োজন ছাড়া টয়লেটে না যাওয়া: প্রয়োজন ব্যাতিত টয়লেটে বেশি যাবেন না। যখন পায়খানার বেগ লাগবে শুধুমাত্র তখনই পায়খানায় যাবেন।
- টয়লেটে বেশিক্ষণ বসে না থাকা: বেশি চাপ না লাগলে টয়লেটে গিয়ে বেশিক্ষণ বসে থাকবেন না। এর ফলে আপনার পাইলসের সমস্যা হতে পারে। তাই দ্রুত টয়লেট সেরে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
পাইলস হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে
পাইলস হলে যেসব খাবার খেতে পারবেন এবং যেসব খাবার খেলে পাইলসের জন্য ভালো সেগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো।
- ফাইবার যুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খাবেন।
- দৈনিক বেশি করে পানি পান করুন।
- আঁশযুক্ত শাকসবজি এবং ফলমূল খাবেন।
- রাতে ভাতের পরিবর্তে আটার রুটি খেতে পারেন।
- প্রতিদিনের খাবারে তালিকায় রাখুন ওটস।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য খেতে পারেন ইসুবগুলের ভুষি।
- পাইলস নিরাময়ে প্রতিদিন খেতে পারেন লেবু ও আদার রস।
- পাইলস হলে খাবারে তেল হিসেবে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
- পাইলস নিরাময়ে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি করে জাম খেতে পারেন।
- ঘৃতকুমারী খাবার হিসেবে খেতে পারেন।
- পাইলস নিরাময়ে নিয়মিত খেতে পারেন তিল।
পাইলস হলে উপরোক্ত খাবারগুলো খেলে পাইলস নিরাময় সম্ভব হতে পারে। আপনারা উপরে জানলেন পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি। এবং পাইলস হলে কি কি খাবার খেতে হয় সে সম্পর্কেও ধারণা পেলেন।
পাইলস হলে কি কি খাওয়া নিষেধ
পাইলস হলে যেসব খাবার খাওয়া নিষেধ তা নিচে আলোচনা করা হলো।
- ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকুন।
- মাছ, মাংস ইত্যাদি কম খাবেন।
- আইসক্রিম জাতীয় জিনিস কম খাবেন।
- ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন।
- চা ও কফি প্রতিদিন কম করে খাবেন।
- ধূমপান বর্জন করুন।
- মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন।
- তেলেভাজা জিনিস কম করে খাবেন।
- খোসাহীন শস্য কম করে খাবেন।
- কোমল পানীয় বর্জন করুন।
- দুগ্ধ জাতীয় খাদ্য কম করে খাবেন এবং প্রয়োজনে বর্জন করুন।
উপরোক্ত খাবারগুলো যতদূর সম্ভব বর্জন করাই ভালো। এতে আপনার পাইলসের সমস্যা কিছুটা হলেও নিরাময় সম্ভব।
শেষ কথা: পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি
প্রিয় পাঠক, আজকের এই অনুচ্ছেদে আমি আলোচনা করলাম পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি। আজকের এই পোস্টটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়লে সহজেই পাইলস থেকে বাঁচার উপায় কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ে আপনার পাইলস সম্পর্কে অনেক ধারণা হয়েছে।
পাইলস হলে কি উপায়ে পাইলসের চিকিৎসা করবেন সে সম্পর্কেও ধারণা পেয়েছেন। আজকের পোস্টটি পড়ে যদি আপনার উপকার হয় তাহলে অবশ্যই পোস্টটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ। ২৫৭৯২
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url