OrdinaryITPostAd

মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন

মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন এ বিষয়ে আপনার ধারণা আছে কি? আজকের এই পোস্টে আমরা বিশদভাবে মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন সে বিষয়টি তুলে ধরব। আশা করি পুরো পোস্টটি পড়লে আপনারা মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন সে সম্বন্ধে বিজ্ঞানসম্মত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী জানতে পারবেন। 
বিভিন্ন কারণে মেয়েদের তলপেটে ব্যাথা অনুভূত হতে পারে। মেয়েদের তলপেটে ব্যথা হওয়ার কারণগুলো পূর্ব থেকে জানা থাকলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহজ হয়। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকের এই পোস্টে মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আশা করি পোস্টটি পড়লে আপনারা তলপেটে ব্যথা প্রতিরোধের যাবতীয় উপায় সমূহ শিখে ফেলবেন। সুতরাং, দেরি না করে পোস্টটি পড়ে ফেলুন। 

পোস্ট সূচিপত্র - মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন জানুন

মেয়েদের তলপেটে ব্যথা কী

মেয়েদের তলপেটে ব্যথাকে ইংরেজিতে লোয়ার এবডোমিনাল পেইন নামে ডাকা হয়ে থাকে। বিভিন্ন কারণে মেয়েদের তলপেটে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। জরায়ু, ডিম্বাশয়, মূত্রথলি, বৃহদন্ত্র, এপেনডিক্স ইত্যাদির যেকোনো অস্বাভাবিক অবস্থার কারণে মেয়েদের তলপেটে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। তলপেটে ব্যথা হওয়ার কোন মামুলি ব্যাপার নয়, সেজন্য মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন এ বিষয়টি সুস্পষ্ট ভাবে জেনে রাখা জরুরী। তাই এ বিষয়গুলো জানার জন্য পুরো পোস্টটি পড়ে ফেলুন।

মেয়েদের তলপেটে ব্যথার কারণ 

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা নিশ্চয়ই মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন এ বিষয়টি জেনে নেওয়ার জন্য এই পোস্টে প্রবেশ করেছেন। এখন আমি আপনাদের সামনে মেয়েদের তলপেট ব্যাথা হওয়ার উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ তুলে ধরবো। তারপর পোস্টের পরবর্তী অংশ থেকে আপনারা মেয়েদের তলপেটের ব্যথা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়সমূহ জানতে পারবেন। আপাতত মেয়েদের তলপেট ব্যথা হওয়ার কারণসমূহ পড়ে ফেলুন। 
  • মেয়েদের প্রস্রাবের সংক্রমণ খুব কম হতে দেখা যায়। ফলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হতে পারে। আর তা থেকেই তলপেটে ব্যথা সৃষ্টি হয়। 
  • জরায়ু বা তার আশেপাশে যদি সংক্রমণ ঘটে তবে সেটিকে পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ নামে ডাকা হয়। এর ফলে তলপেটে ব্যথা, জ্বর, বমি ইত্যাদি অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়। অনেক সময় এই সংক্রমণ দীর্ঘমেয়াদী রুপ লাভ করে  
  • অনেক সময় ভ্রুণ জরায়ুতে স্থাপিত না হয়ে ডিম্বনালীতে স্থাপিত হতে পারে। ফলে ডিম্বনালী ফেটে গিয়ে জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হয়। এর ফলে পেটের সমগ্র অংশে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হওয়ার পাশাপাশি রক্তক্ষরণ ঘটে। আর এই রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে ব্যথার মাত্রা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
  • অ্যাপেন্ডিক্স এর ব্যথা হলে সেটি সাধারণত পেটের ডান সাইডে অনুভূত হয়। অ্যাপেন্ডিসাইটিস ফেটে গিয়ে এই ধরনের তীব্র ব্যথার সৃষ্টি করে। যদি আপনার ডান সাইডে ব্যথা ক্রমাগত বাড়তে থাকে তবে সেটি অ্যাপেন্ডিক্স এর কারণে হচ্ছে বলে ধরে নিতে পারেন। এমন অবস্থায় অবশ্যই নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে অপারেশন করতে হবে। 
  • কোষ্ঠকাঠিন্য, ibs, মুত্র থলিতে পাথর, বৃক্কে পাথর ইত্যাদি কারণে মেয়েদের তলপেট ব্যথা হতে পারে। বৃক্কে পাথর হলে সাধারণত তলপেটে ডান সাইডে ব্যথা হয়। এটি মেয়েদের তলপেট ব্যথা হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। 
  • অত্যন্ত ভারী ব্যায়ামের কারণে পেশির অবসাদগ্রস্ততা, পানিশূন্যতা সৃষ্টি হওয়া, ইলেক্ট্রোলাইটয়ের ভারসাম্যহীনতা সহ নানা কারণে পেশিতে টান লাগতে পারে। ফলশ্রুতিতে মেয়েদের তলপেটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। 
  • মাসিকের সময় সাধারণত মেয়েদের পেটে স্বাভাবিকভাবেই ব্যথা অনুভূত হয়। তবে জরায়ুতে টিউমার ও এন্ড্রোমেট্রোসিস হলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বানু নির্গত হয়। এটিও মেয়েদের তলপেট ব্যথা হওয়ার জন্য দায়ী। সুতরাং আপনারা মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন সে বিষয়ে অনেকটাই জেনে ফেললেন। 

মেয়েদের তলপেটের ব্যথা থেকে মুক্তির উপায় 

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা পোস্টের পূর্ববর্তী অংশ হতে মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন সে বিষয়ে কিছুটা ধারণা অর্জন করেছেন। এবার আমি আপনাদের সামনে মেয়েদের তলপেটের ব্যথা প্রতিরোধ করতে করণীয় বিষয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব। তাই পোস্টের নিচের অংশ এখনই পড়ে নিন।
  • প্রাচীনকাল থেকে যে কোন ব্যথা প্রতিরোধের জন্য আদা ব্যবহার হয়ে আসছে। আদায় প্রচুর পরিমাণে এন্টিইনফ্লামেটরি ও প্রদাহ বিরোধী গুণ থাকার কারণে এটি ব্যাথা প্রতিরোধে ফলপ্রসু ভূমিকা রাখে। তাই প্রাকৃতিকভাবে তলপেট ব্যথা কমাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ আদা খেতে পারেন। একই সাথে আদা চা খেলেও উপকৃত হবেন। 
  • মেয়েদের তলপেট ব্যথা যেহেতু শারীরবৃত্তীয় নানা কারণে সংঘটিত হয়, তাই ব্যথা প্রতিরোধে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুষম খাবার গ্রহণ করুন। কখনো তেল চর্বি বা ফ্যাট জাতীয় খাবার অধিক পরিমাণে গ্রহণ করবেন না। 
  • রসুন খাওয়ার পর একগ্লাস গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খান। লেবুর রস ব্যতীত কোন চিনি বা লবণ পানির ভেতরে দেবেন না। মিশ্রিত এই পানীয়টি খেলে পেটের অতিরিক্ত তেল চর্বি কেটে যাবে। ফলে পেটে অস্বাভাবিক ব্যথা সৃষ্টি হবে না। 
  • ঝাল জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে গ্রহণ করুন। সেজন্য তরকারিতে অতিরিক্ত কাঁচামরিচ দিতে পারেন। ঝাল জাতীয় খাবার খেলে এটি দেহের চর্বি কাটাতে ভূমিকা রাখবে। ফলে তলপেটে ব্যথা জনিত কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না। 
  • প্রচুর পরিমাণে আপেল ও কলা খেতে পারে। আপেল ও কলায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ফাইবার উপস্থিত থাকে যা পেট ব্যথা কমিয়ে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। 
  • তলপেটে ব্যথা হলে সেটিকে উড়িয়ে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। অনেক সময় তলপেটের ব্যথা বড় কোন রোগের লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে। তাই দীর্ঘ সময় ধরে তলপেটের ব্যথা অনুভূত হলে দেরি না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
  • অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে এসিড স্টার্চ উপস্থিত থাকায় এটি অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াকে সুস্থ রাখে। এজন্য এটি পেটের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। তাই এক কাপ পানিতে এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ও মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। আশা করি উপকৃত হবেন। সুতরাং আপনারা পোস্টের এই অংশটি পড়ে মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে ধারণা পেয়ে গেলেন। 

তলপেটের ব্যথা প্রতিরোধে করণীয় 

আরো বিভিন্ন উপায়ে তলপেটের ব্যথা প্রতিরোধ করা যায়। সেজন্য অবশ্যই আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে জীবন যাপন করতে হবে। মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন তা ইতোমধ্যে জেনেছেন। তবে চলুন তলপেটের ব্যথা প্রতিরোধে কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তা জেনে নেওয়া যাক। 
  1. সব সময় টেনশন মুক্ত থাকুন। মানসিক দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকলে তলপেটের ব্যথাও আক্রমণ করবে না। 
  2. দিনে অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। 
  3. কখনো তেল চর্বিযুক্ত খাবার অধিক পরিমাণে গ্রহণ করবেন না। 
  4. বেশি বেশি পানি পান করুন। এটি যেমন হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করবে ঠিক তেমনি রোগ প্রতিরোধেও সহায়ক হবে। 
  5. অত্যন্ত ভারী কোন শারীরিক কাজ করা যাবে না। কারণ ভারী কাজ করলে শরীরের অভ্যন্তরস্থ অঙ্গের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। 
  6. মাঝেমধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ব্যায়াম করুন। অলস জীবনযাপন পরিহার করে সবসময় কাজের ভেতরে থাকুন। 
  7. ভিটামিন সি যুক্ত ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। 
  8. ধূমপান পরিহার করুন। বাহিরের প্রক্রিয়াজাতকরণ বিভিন্ন খাবার থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
  9. আশা করি এ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আপনারা তলপেটের ব্যথা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবেন। আর মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন সেটি সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য জেনে নিতে পোস্টের পূর্ববর্তী অংশ পুনরায় পড়তে পারেন। 

শেষ বার্তা

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আপনারা নিশ্চিতভাবেই মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন সে সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন। আশা করি তলপেটের ব্যথা প্রতিরোধে এই পোস্টে উল্লেখিত তথ্য গুলো আপনাদের যথেষ্ট উপকারে আসবে। মেয়েদের তলপেটের ব্যথা কেন হয় এবং কী করবেন এ সংক্রান্ত তথ্য অন্যদের জানাতে চাইলে এখনই পোস্টটি তাদের নিকট শেয়ার করে দিন। প্রাত্যহিক জীবনের স্বাস্থ্য বিষয়ক নিত্য নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ সব টিপস পেতে সব সময় আমাদের ওয়েবসাইটে নজর রাখুন। @23891

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩